ঢাকা ১০:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুলভ দর্শন হলুদ গলা কাঠঠোকরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:০৩:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  • ৩৫২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সুলভ দর্শন, আবাসিক পাখি। প্রথম দর্শনে যে কারোরই নজর কাড়তে সক্ষম। বাসস্থান দেশের গভীর বনাঞ্চলে হলেও বেশিরভাগই বিচরণ করে চিরসবুজ পাতাঝরা বনের বড় পাতাধারী সুউচ্চ বৃক্ষের কাণ্ডে।

পাহাড়ের পাদদেশে কিংবা চা বাগানেও সাক্ষাৎ মেলে। সাক্ষাৎ মেলে কম-বেশি প্যারাবনেও। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল, ভুটান, চীন ও ইন্দোনেশিয়ায় বিস্তৃতি রয়েছে। বিশ্বে বিপদ মুক্ত। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

এরা সাধারণত জোড়ায় কিংবা পারিবারিক ছোট দলে বিচরণ করে। জোড়ের পাখির সঙ্গে সাক্ষাৎ না ঘটলে যোগাযোগ রক্ষার্থে ‘পী-উ.. পী-উ..’ সুরে চেঁচিয়ে ওঠে। সুর বড়ই করুণ। পেঙ্গা ও ফিঙ্গে পাখিদের সঙ্গে এদের খানিকটা ভাব লক্ষ্য করা যায়। সুযোগ পেলে ওদের সঙ্গে শিকারেও বের হয়।

তা ছাড়া নিজেরা সকাল এবং গোধূলীলগ্নে নিয়ম করে শিকারে বের হয়। গাছের উঁচু খাড়া ডালের বাকল ঠুঁকরিয়ে শিকার খোঁজে। ভেতরে পোকামাকড়ের সন্ধান মিললে লম্বা শক্ত, আঁঠালো জিহবার সাহায্যে তা বের করে আনে। পায়ের শক্ত নখর দিয়ে আঁকড়ে ধরে গাছের খাড়াকাণ্ডে তরতরিয়ে লাফিয়ে ওপরে উঠে। প্রজনন মৌসুমে বনপ্রান্তরে ছোটাছুটি বেড়ে যায়। বেড়ে যায় হাঁকডাকও।

পাখির বাংলা নাম: ‘হলুদ-গলা কাঠঠোকরা’, ইংরেজি নাম: ‘ইয়েলো-নেপড উডপেকার’ (Yellownaped Woodpecker), বৈজ্ঞানিক নাম: Picus flavinucha। দেশে প্রায় ২০ প্রজাতির কাঠঠোকরা নজরে পড়ে। এরা ‘বড় হলদেকুড়ালি’ নামেও পরিচিত।

প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ৩৩ সেন্টিমিটার। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ পাখির মাথা ও ঘাড়ে সিংহের কেশরের মতো খাড়া সোনালি-হলুদ ঝুটি রয়েছে। গলা সোনালি-হলুদ, গলার দু’পাশ কালো।

পিঠ হলদে সবুজ। ডানার প্রান্ত পালক লালচে বাদামির ওপর কালো পট্টি। লেজ কালো। শক্ত-পোক্ত ঠোঁটটি হলদে-ধূসর, গোড়া কালচে, অগ্রভাগ মোম সাদা। চোখ বাদামি গাঢ় লাল। পা ও পায়ের পাতা ধূসর সবুজ। স্ত্রী-পুরুষ পাখির বর্ণে সামান্য পার্থক্য রয়েছে। ওদের থুতনি, গলা লালচে বাদামি। তা ছাড়া আকারে সামান্য বড় পুরুষ পাখি। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ঘাড় ফ্যাকাসে, গলায় কালোচিতি এবং পেট ধুসর।

প্রধান খাবার: গাছ পিঁপড়া এবং গাছের বাকলে লুকিয়ে থাকা পোকামাকড়। ফুলের মধুর প্রতি আসক্তি লক্ষ্য করা যায়। প্রজনন মৌসুম মার্চ থেকে মে। গাছের মরা কাণ্ডে গর্ত বানিয়ে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ফুটতে সময় লাগে ১৮-২০ দিন।

সূত্রঃ মানবকণ্ঠ

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

সুলভ দর্শন হলুদ গলা কাঠঠোকরা

আপডেট টাইম : ১২:০৩:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সুলভ দর্শন, আবাসিক পাখি। প্রথম দর্শনে যে কারোরই নজর কাড়তে সক্ষম। বাসস্থান দেশের গভীর বনাঞ্চলে হলেও বেশিরভাগই বিচরণ করে চিরসবুজ পাতাঝরা বনের বড় পাতাধারী সুউচ্চ বৃক্ষের কাণ্ডে।

পাহাড়ের পাদদেশে কিংবা চা বাগানেও সাক্ষাৎ মেলে। সাক্ষাৎ মেলে কম-বেশি প্যারাবনেও। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল, ভুটান, চীন ও ইন্দোনেশিয়ায় বিস্তৃতি রয়েছে। বিশ্বে বিপদ মুক্ত। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

এরা সাধারণত জোড়ায় কিংবা পারিবারিক ছোট দলে বিচরণ করে। জোড়ের পাখির সঙ্গে সাক্ষাৎ না ঘটলে যোগাযোগ রক্ষার্থে ‘পী-উ.. পী-উ..’ সুরে চেঁচিয়ে ওঠে। সুর বড়ই করুণ। পেঙ্গা ও ফিঙ্গে পাখিদের সঙ্গে এদের খানিকটা ভাব লক্ষ্য করা যায়। সুযোগ পেলে ওদের সঙ্গে শিকারেও বের হয়।

তা ছাড়া নিজেরা সকাল এবং গোধূলীলগ্নে নিয়ম করে শিকারে বের হয়। গাছের উঁচু খাড়া ডালের বাকল ঠুঁকরিয়ে শিকার খোঁজে। ভেতরে পোকামাকড়ের সন্ধান মিললে লম্বা শক্ত, আঁঠালো জিহবার সাহায্যে তা বের করে আনে। পায়ের শক্ত নখর দিয়ে আঁকড়ে ধরে গাছের খাড়াকাণ্ডে তরতরিয়ে লাফিয়ে ওপরে উঠে। প্রজনন মৌসুমে বনপ্রান্তরে ছোটাছুটি বেড়ে যায়। বেড়ে যায় হাঁকডাকও।

পাখির বাংলা নাম: ‘হলুদ-গলা কাঠঠোকরা’, ইংরেজি নাম: ‘ইয়েলো-নেপড উডপেকার’ (Yellownaped Woodpecker), বৈজ্ঞানিক নাম: Picus flavinucha। দেশে প্রায় ২০ প্রজাতির কাঠঠোকরা নজরে পড়ে। এরা ‘বড় হলদেকুড়ালি’ নামেও পরিচিত।

প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ৩৩ সেন্টিমিটার। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ পাখির মাথা ও ঘাড়ে সিংহের কেশরের মতো খাড়া সোনালি-হলুদ ঝুটি রয়েছে। গলা সোনালি-হলুদ, গলার দু’পাশ কালো।

পিঠ হলদে সবুজ। ডানার প্রান্ত পালক লালচে বাদামির ওপর কালো পট্টি। লেজ কালো। শক্ত-পোক্ত ঠোঁটটি হলদে-ধূসর, গোড়া কালচে, অগ্রভাগ মোম সাদা। চোখ বাদামি গাঢ় লাল। পা ও পায়ের পাতা ধূসর সবুজ। স্ত্রী-পুরুষ পাখির বর্ণে সামান্য পার্থক্য রয়েছে। ওদের থুতনি, গলা লালচে বাদামি। তা ছাড়া আকারে সামান্য বড় পুরুষ পাখি। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ঘাড় ফ্যাকাসে, গলায় কালোচিতি এবং পেট ধুসর।

প্রধান খাবার: গাছ পিঁপড়া এবং গাছের বাকলে লুকিয়ে থাকা পোকামাকড়। ফুলের মধুর প্রতি আসক্তি লক্ষ্য করা যায়। প্রজনন মৌসুম মার্চ থেকে মে। গাছের মরা কাণ্ডে গর্ত বানিয়ে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ফুটতে সময় লাগে ১৮-২০ দিন।

সূত্রঃ মানবকণ্ঠ